Column

Hizb-ut-Tahrir still going strong

Hizb-ut-Tahrir still going strong

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 04 May 2018, 07:12 am
নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়া সত্ত্বেও জঙ্গি ইসলামি সংগঠন হিজব-উত-তাহ্‌রিরের (হুট) অব্যহত রয়েছে কার্যকলাপ। নিরাপত্তাবাহিনীর ধরপাকড় অগ্রাহ্য করেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই সংগঠন তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের গোপন ডেরা থেকে বেরিয়ে এসে জঙ্গি কাজকর্মে লিপ্ত হচ্ছে দলের সদস্যরা।

সংগঠনের বিশ্বব্যাপী পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে হুটের নেতা-কর্মীরা  গত এপ্রিলের ১৩ তারিখে  ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবারের নামাজের পরে মিছিল বের করেছিল। সরকারবিরোধী স্লোগান সংবলিত লিফলেটও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলি করে তারা। বিভিন্ন মসজিদ থেকে হঠাৎ করে বেরিয়ে এসে এই মিছিলে যোগ দিয়ে সরকারবিরোধে আওয়াজ তোলে এরা।

 

{special_block_1}বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি কাছে খবর, দেশের রাজধানীর উত্তরা, মহম্মদপুর এবং মিরপুর অঞ্চলে হুট বেশ কিছু কোচিং সেন্টার চালায়। এই সব জায়গায় পড়তে আসা ছাত্রদের মগজ ধোলাই করে হত্যাকাণ্ড এবং সংগঠনের অন্যান্য গোপন কাজকর্মে যুক্ত করা হয়।
 

সরকারবিরোধী স্লোগানসহ প্রকাশ্য স্থানে বহু পোস্টারও লাগিয়েছে হুট। দেশে ইসলামি শাসনের প্রতিষ্ঠা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল সম্পদ রক্ষা করা এবং আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও ভারতের প্রভাবমুক্ত একটি  শক্তিশালী প্রতিরক্ষাবাহিনী গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে এই সব স্লোগানগুলিতে। ঢাকা শহরে এবং শহরতলির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে সাঁটা এই সব পোস্টারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করে  খেলাফত প্রতিষ্ঠার ডাক দেওয়া হয়েছে। 

 

বি এন পি-জামাত চক্রের থেকে গোপন পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া হুট এখন রোহিংগিয়া সংকট এবং তজ্জনিত সমবেদনাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পক্ষে সমর্থনভিত্তি তৈরি করতে চাইছে। কক্স বাজার এবং দেশের অন্য কয়েকটি জায়গায় সম্প্রতি এরা লিফলেটের মাধ্যমে রোহিংগিয়া উদ্বাস্তুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে এ ব্যাপারে সরকারের গাফিলতির কড়া সমালোচনা করেছে তারা।

 

চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার হওয়া নাজমুল হুদা নামে একজন হুট সদস্য এই জঙ্গি দলটির   কার্যকলাপের ব্যাপারে বিশদে প্রকাশ করেছে। তার কথা  অনুযায়ী, মহিউদ্দিন নামে চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির আরাবিক স্টাডিজের এক শিক্ষক চট্টগ্রামে হুট চক্রের কো- অর্ডিনেটর।

 

এই তথাকথিত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রকৃতপক্ষে জামাত-নিয়ন্ত্রিত এবং এখানকার প্রায় সব শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারীই জামাতের অনুগামী। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাগোয়া অনেকগুলি বাড়ি ছিল সম্প্রতি ফাঁসি হওয়া জামাত নেতা মির কাশেম আলির মালিকানাধীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষক- অশিক্ষক কর্মচারী এই বাড়িগুলিতে থাকেন।  {special_block_2}

 

ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে  বি ডি আর-বিদ্রোহের বার্ষিকীতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে প্রচারপত্র ছড়িয়ে সশস্ত্রবিদ্রোহের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিয়ে দেশে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য সামরিক কর্মীদের ডাক দিয়েছিল এই সংগঠন। এই প্রচারপত্রগুলিতে বি ডি আর বিদ্রোহ ঘটিয়ে সামরিক অফিসারদের হত্যা করার অভিযোগ করা হয়েছেলি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।  উদ্দেশ্য ছিল সামরিক কর্মীদের মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা জাগিয়ে তোলা।

 

হুটের নেতা এবং কর্মীরা নানা ভাবে  অত্যন্ত সক্রিয়। চিফ কো- অর্ডিনেটর  মহিউদ্দিন, প্রবীণ নেতা গোলাম মাওলা, কাজি মোর্শেদুল হক  এবং মাহমাদুল বারি সহ দলের ৩৫০ জন নেতা-কর্মী  ২০১০ সালের ২০শে অক্টোবরে সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার সময়  গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এদের কাজকর্মে কোনও ভাঁটা পড়েনি। দেশে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠার দাবির সপক্ষে এরা প্রকাশ্যেই বিচ্ছিন্নতামূলক এবং অগণতান্ত্রিক  কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। হুট আসলে একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি ইসলামি সংগঠন, যার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৫৩ সালে জেরুজালেমে একটি পৃথক প্যালেস্টিনিয় ভূমি তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে। ২০০১ সালে বি এন পি -জামাত মোর্চা ক্ষমতায় আসার পর এরা বাংলাদেশে ঘাঁটি স্থাপন করে।

 

  হুটের বাংলাদেশ ইউনিট নিষিদ্ধ হওয়ার পর এদের ইউ কে শাখা সে দেশে বাংলাদেশ মিশনের সামনে বিক্ষোভ   প্রদর্শন করেছিল। আল কায়দা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি দলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার জন্য    পৃথিবীর ২০ টি দেশে নিষিদ্ধ এই হুট। বাংলাদেশে  হুটের কাজকর্ম যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, তার জন্য বিভিন্ন গোপন পথে অর্থ সাহায্য করে চলেছে সংগঠনের ইউ কে শাখা।

 

হুটের জঙ্গিরা সংগোপনে জামাত এবং তাদের ছাত্র শাখা ইসলামি ছাত্র শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে। উদ্দেশ্য, দেশে চরম অস্থিরতা তৈরি করা এবং যুদ্ধাপরাধ বিচার বানচাল করে দেওয়া।