Column

নারী ক্ষমতায়নে হেফাজতের কুৎসিত অবস্থান

নারী ক্ষমতায়নে হেফাজতের কুৎসিত অবস্থান

| | 21 Jul 2013, 11:12 am
হেফাজত-এ-ইসলাম এবং হাথাজারি মাদ্রাসার প্রধান শাহ আহমেদ শফির 'আল্লামা' উপাধির অর্থ 'জ্ঞ্যানী ব্যক্তি'। জ

 জ্ঞ্যানী অথবা বিদ্বান ব্যক্তিদের \'আল্লামা\' উপাধিতে ভূষিত করার এই প্রথা চালু করেছিলেন মুঘল সম্রাট আকবর। েসামাজিক ব্যাপারে \'আল্লামা\' উপাধিধারী এইসব ব্যক্তিদের বক্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ন। সুতরাং তাঁর এই মর্যাদাপূর্ন সামাজিক অবস্থানের জন্য দেশে আল্লামা শফির লক্ষ লক্ষ অনুগামী আছেন, যাঁরা তাঁর জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত।

 
যে সংগঠনের তিনি প্রধান, সেই হেফাজত-এ-ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে প্রথমে পথ চলা শুরু করেছিল। তবে  শহর পুরসভার গত নির্বাচনে কিন্তু এই সংগঠনটি বি এন পি-নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোটের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালায় এবং শেষ পর্যন্ত সেই জোটেই যোগ দেয়।
 
 হাথাজারি মাদ্রাসায় ওয়াজ মেহফিলের সময় আল্লামা শফির একটি সাম্প্রতিক বক্তৃতা সিডি, ভিসিডি এবং গণমাধ্যম প্রতিবেদনের মাধ্যমে সারাদেশে, এমনকি বিদেশেও দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছে। এই বক্তৃতায় তিনি দেশে মহিলাদের ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেছেন চতুর্থ অথবা পঞ্চম শ্রেনীর পরে আর না পড়ে মেয়েদের ঘরে থাকা দরকার।এমনকি বিবাহিত এবং যাঁদের সন্তান আছে, এমন মহিলারাও বাইরে না বেরিয়ে স্বামীর ঘরেই থাকবেন।
 
মহিলাদের ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে তাঁর বক্তব্যে আল্লামা শফি বলেছেন, উচ্চশিক্ষা মেয়েদের জন্য নয়। তাদের প্রথাগত শিক্ষা চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেনী অবধিই থাকা উচিৎ,কারন সেইটুকু বিদ্যাই বিয়ের পর স্বামীর আয়ের হিসেব রাখার পক্ষে যথেষ্ট। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, যে সব মহিলারা উচ্চশিক্ষা গ্রহন করেন, তাঁদের সন্তান ধারনের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে খুব জোরালোভাবে তাঁর মত প্রকাশ করে আল্লামা শফি বলেন, স্বামীকে খুশি রাখা এবং সন্তান উৎপাদন করাই মেয়েদের একমাত্র কাজ। জন্মনিয়ন্ত্রণ করাকে পাপ কাজ বলে তিনি পুরুষদের চারজন করে স্ত্রী রাখার এবং যতখুশি সন্তানের জন্ম দেওয়ার উপদেশ দেন। তিনি জানিয়েছেন, আল্লা সকলের জন্যই খাদ্যের যোগান দেন, তাই সন্তানের ভরনপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারন নেই।
 
সহশিক্ষারও বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে আল্লামা শফি বলেছেন এতে ছেলে মেয়েদের মধ্যে অবাধ মেলামেশার সুযোগ বাড়ে, ্যা পাপ।মেয়েরা যদি বাড়ির বাইরে যায়, তাহলে তাদের সঙ্গে পুরুষদের ঘনিষ্ঠতা বাড়বে, আর পুরুষরা প্রলোভিত হবে মেয়েদের আরও কাছে আসতে।এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন  যে সব পুরুষ নারী সৌন্দর্য্যে আকৃষ্ট হয়না, তারা নপুংশক। সুতরাং মেয়েদের যদি উচ্চশিক্ষা নিতে দেওয়া হয়, তবে তারা অবশ্যম্ভাবীভাবে পুরুষদের সংস্পর্শে আসবে এবং নারী-পুরুষের মধ্যে এই অবাধ মেলামেশা ইসলাম- বিরোধী।
 
 
আল্লামা শফি, এই শিক্ষাই কি আপনি পেয়েছেন ইসলাম নিয়ে অধ্যয়ন করে?
 
বাংলাদেশের মহিলারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা নিয়েছেন। বর্তমান সময়েও দেশের শাসনভার একজন দক্ষ মহিলার হাতে। অতীতেও মহিলারা সফলভাবেই দেশ শাসনে অংশ নিয়েছেন। তাদের ১৩-দফা দাবি পেশ করে ইসলাম এবং দেশের সংবিধানকে বিকৃত করা হেফাজত-এ-ইসলাম তাই আজ এক অতি নিন্দনীয়,কুৎসিত অবস্থান নিয়েছে।