Column

যৌথ নদী-ব্যবস্থার আহ্বান বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রীর

যৌথ নদী-ব্যবস্থার আহ্বান বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রীর

| | 26 Jul 2013, 02:04 pm
আমাদের সংবাদদাতা দিল্লি, জুলাই ২৬ ঃ আন্তর্জাতিক সীমানার উর্দ্ধে উঠে সাধারন আঞ্চলিক সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকার জন্য যৌথ নদী-ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানালেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ডঃ দীপু মনি।

 গতকাল দিল্লির অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে চতুর্থ আর কে মিশ্র স্মৃতি বক্তৃতা দেওয়ার সময় দীপু মনি বলেন " ভবিষ্যতের কথা ভেবে যদি একটি যৌথ নদী-ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, তবে তা  আন্তর্জাতিক আইনের বর্তমান ও নতুন-উভয় ধরণের নীতিকেই অনুসরণ করে ভিন্নধর্মী প্রয়োজন ও অগ্রাধিকার পূরণে সাহায্য করবে।

 
ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশই তাদের অভিন্ন লক্ষ্য এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য একটি যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মুখে দাঁড়িয়ে আছে বলে মন্তব্য করে ডঃ দীপু মনি বলেন, আইনের মাধ্যমে একটি অববাহিকা ব্যবস্থা তৈরি করলে তা আর্থিক এবং সামাজিক দিক দিয়ে উন্নত জীবন গড়ে তোলায় সহায়ক হবে।
 
এই অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন ভারতের মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ডঃ শশী থারুর।
 
তাঁর বক্তৃতায় দীপু মনি বলেন, এইরকম একটি ব্যবস্থা দুই দেশের অনেক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ব্যাপারে কাজে লাগবে, যেগুলি ভূতপূর্ব সাম্রাজ্যবাদী শাসকরা ঐতিহাসিকভাবে অবহেলা করে এসেছিল। এই ব্যবস্থা অববাহিকা অঞ্চলে গড়ে ওঠা তিন থেকে পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতার শক্তি বাড়িয়ে তুলবে বলে তিনি মনে করেন।
 
"একটি অববাহিকা-ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সেই অঞ্চলের বিভিন্ন মানুষের মধ্যে যে মিলন ঘটে, তা বিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিদ্যা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে  তাদের সমষ্টিগত ও পৃথকভাবে অর্জিত সাফল্যের আদানপ্রদান ঘটিয়ে একে অপরকে সমৃদ্ধ করে তুলতে সাহায্য করে," তিনি বলেন।
 
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী বলেন একটি অববাহিকা-ব্যবস্থা তৈরি করতে দরকার একটি সুবিশাল পরিকল্পনা, যা \'গ্রেড কনসার্টের\' মতই বিভিন্নতাকে নিয়ে অভিন্ন হয়ে উঠবে।
 
অববাহিকা নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র সঙ্ঘের মত আন্তর্জাতিক এবং সার্ক, বিমস্টেক ও আসিয়ানের মত আঞ্চলিক রাষ্ট্র সংগঠনের ব্যবস্থা-বিধি এবং অনুশাসনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ে একটি অববাহিকা-ব্যবস্থার এগিয়ে চলা দরকার।
 
ডঃ দীপু মনি বলেন,স্বাভাবিকভাবেই একটি অববাহিকা-ব্যবস্থার অভিমুখ ভারত-বাংলাদেশের সীমানার উর্দ্ধে থাকবে এবং তার আওতায় থাকবে ভুটান, নেপাল, মায়ানমার, চিন এবং বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের অববাহিকাগুলিও।
 
ব-দ্বীপগুলিকে অন্তর্গত করে এই যৌথ অববাহিকা-ব্যবস্থা প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করে এবং আবহাওয়া পরিবর্তন বিষয়টির মোকাবিলায় সাহায্য করে রাষ্ট্রভেদে মানুষের অভিন্ন সমস্যা এবং প্রয়োজনগুলিকে দেখবে, তিনি বলেন।
 
"এর ফলে আমরা মহামারীর মত বিপদের মোকাবিলা করতে অপরিহার্য ওষুধপত্রের আপৎকালীন ভান্ডারও গড়ে তুলতে পারব। এছাড়াও ফুড ব্যাংক, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অন্যান্য জিনিষের বাফার স্টক তৈরি করার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ডাটা বেস শক্তিশালী করে তুলতে পারব আমরা," তিনি জানান।
 
ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য শেখ হাসিনা এবং মনমোহন সিংহের সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে ডঃ দীপু মনি বলেন, এঁরা দু\'জনেই একই দৃষ্টিতে পৃথিবীটা দেখতে সক্ষম হয়েছেন। "এঁরা দু\'জনেই দেখিয়েছেন যে, আমাদের সম্পর্ক দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বাস, আশা এবং প্রত্যয়ের উপর," তিনি বলেন।
 
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর বক্তৃতার আগে ও আর এফের অধিকর্তা সঞ্জয় জোশি ডঃ দীপু মনি, তাঁর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল এবং ডঃ শশী থারুরকে স্বাগত জানান।