Column
আমস্টারডাম- উনিশশো একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় যে ব্যাপক গণহত্যা হয়েছিল, ত
আধুনিক ইতিহাসের অন্ধকার দিকে থাকা যে সব মানবাধিকারবিরোধী জঘন্যতম পাপকর্মগুলি আজ পর্যন্ত পৃথিবী চাক্ষুস করেছে, বাংলাদেশের গণহত্যা তার একটি," ই এফ এস এ এস- এর একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে।
{special_block_1}"উনিশশো একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম বহু ব্যক্তিগত কাহিনী বর্ননা করে। মনোযোগ দিয়ে পড়লে দেখা যায় সেগুলির ছত্রে ছত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এটা স্পষ্ট যে, মানুষ যতদিন পর্যন্ত ইতিহাসের নিন্দিত অধ্যায়গুলির পরিশেষ টেনে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার নৈতিক দায়িত্ব সমষ্টিগতভাবে মেনে না নিচ্ছে, ততদিন কোনও দীর্ঘস্থায়ী সমাপ্তি হবেনা," নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে।
"শুধুমাত্র বাংলাদেশ অথবা পাকিস্তানে নয়, উনিশশো একাত্তরের এই ভুলে যাওয়া গণহত্যা এবং সে ব্যাপারে পৃথিবীর নীরবতা আন্তর্জাতিক স্তরের অনুশোচনা প্রকাশের দাবি করে," গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, যার শিরোনাম "জেনোসাইড ডিবেট; আ কনশেনসাস রিসার্চ।"
এতে বলা হয়েছে একাত্তরের গণহত্যা শুধুমাত্র একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়।{special_block_2}
এ কথা প্রায়ই বলা হয় যে, বিজয়ীরাই ইতিহাস রচনা করে এবং গণ আলোচনা নিজের স্বপক্ষে তৈরি করে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক নেতৃবর্গ নিজেদের উদ্দেশ্যসাধনের জন্য তাঁদের স্থানশক্তিকে ব্যবহার করেন। বস্তুতপক্ষে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এই ভয়ংকর সব ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের বিচারের ক্ষেত্রে কী ভাবে এই সব ব্যাপারগুলি মিলিতভাবে বাধা সৃষ্টি করেছে," বলা হয়েছে গবেষণাপত্রে।
নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে, "অবশ্য চার দশক পরে বাংলাদেশের মানুষ এটা দেখিয়েছেন, যাদের নৃশংস কাজকর্ম তাদের অপূরণীয় এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করেছিল, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করে অতীতের সংশোধন করা এবং নিজেদের ইতিহাস ফিরে লেখার এটাই প্রকৃষ্ট সময়।"
এ ব্যাপারে আরও অনুসন্ধান দরকার, এই অভিমত দিয়ে নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে, " আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, এই বিপুল শোকাবহ ঘটনার ফলে যুদ্ধাপরাধের তদন্তের দায়িত্ব শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং তার আদালতগুলির উপর নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত এবং পাকিস্তান সহ সবার উপরেই এসে পড়ে।"
"১৯৭১ সালের গণহত্যা কেবলমাত্র একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয় ; আইনগত দিক দিয়ে সে রকমই মনে হলেও নৈতিক এবং রাজনৈতিক দিক দিয়ে অবশ্যই নয়। রিচার্ড নিকসনের আমেরিকা সে সময় পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, যদিও তারা জানত তাদের আর্থিক সাহায্য এবং অস্ত্র মানবতাবিরোধী অপরাধকর্মে ব্যবহার করা হচ্ছে। যখন তিরিশ লক্ষ নিরস্ত্র অসামরিক মানুষকে পাশবিকভাবে হত্যা করা হয়েছিল, সে সময় অনুভূতিশুন্য হয়েছিল রাষ্ট্রসংঘ," নিবন্ধে বলা হয়েছে।