Bangladesh

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে পেশাদার ব্যাক্তিঃ আছাদুজ্জামান মিয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে পেশাদার ব্যাক্তিঃ আছাদুজ্জামান মিয়া

| | 12 Apr 2018, 07:33 am
ঢাকা, এপ্রিল ১২ঃ ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আজ বলেছেন যে কিছুদিন আগে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে যে হামলাটি চালানো হয়েছে তা কোনও পেশাদার ব্যাক্তির কাজ।
উপাচার্যের বাসায় গত রোববার হামলা চালানো হয়েছিল।


ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আজ সাংবাদিকদের বলেনঃ " ভিসির বাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যে ধরনের অরাজকতার ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত।"

"ভিসির বাসায় যে কায়দা ও মাত্রায় ভাংচুর করা হয়েছে, সিসি টিভির হার্ড ডিস্ক যেভাবে খুলে নিয়ে গেছে, তাতে মনে হচ্ছে এটা পেশাদার লোকের কাজ," উনি আরও বলেন।


 বাংলাদেশে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ ও দ্রুত সমাধান হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায়। 

সরকারি চাকুরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দেলনে গত কয়েকদিনে গোটা দেশে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। 

এই অবস্থায় শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন। 

এই ঘেষণার পর আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়। 

তবে, আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বলেন, প্রত্যাহার বা বাতিল নয়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী কোটা ব্যবস্থা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হচ্ছে। 

একইসঙ্গে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার ও আন্দোলনের সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় আট শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান। 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'মাদার অব এডুকেশন' বলে অভিহিত করা হয়। 

কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ায় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদও জানান।

এরআগে বুধবার বিকালে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন পর তো আবার আরেক দল এসে বলবে, আবার সংস্কার চাই। তো কোটা থাকলেই সংস্কার। আর না থাকলে সংস্কারের কোনও ঝামেলাই নাই। কাজেই কোটা পদ্ধতি থাকারই দরকার নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য আর বারবার এই আন্দোলন-ঝামেলা মেটানোর জন্য কোটা পদ্ধতিই বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলেই ভালো।’

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৮ এপ্রিল দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড়ে াবস্থান নিলে আশপাশের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

রাত পৌনে ৮টার দিকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। এরপরই দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণায় তার দলের ভিতরেই অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তবে অধিকাংশের মত, তিনি একটি ষড়যন্ত্র অত্যন্ত কার্যকরভাবে ব্যর্থ করে দিয়েছেন। 

কারণ এই আন্দেলনে মদত দিচ্ছিল প্রদধান বিরোধী দল- বিএনপি। মাত্র দুই দিন পরই পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। তাই নতুন বছরকে বরণ করার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শাহবাগকে আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে মুক্ত রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত। এছাড়া, সামনে জাতীয় নির্বাচন।

 তাই এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ না দিয়ে যেকোনও মূল্যে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় সরকার। 

পাশাপাশি সব ধরনের কোটা বাতিল ঘোষণা করলে দেশবাসীর প্রতিক্রিয়া কী হয়, সরকার তাও বুঝে নিতে চায়। এসব বিবেচনা থেকেই প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
 

Image: DMP News Facebook page