Bangladesh
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বোঝা নেওয়ার ক্ষমতা নেই বাংলাদেশের, জানালেন মন্ত্রী
‘সতর্কতার সঙ্গে’ এই সমস্যা সামলানোর চেষ্টা করছে ওনার সরকার।
মন্ত্রী আরও উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে এই
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্রোতের সাথে এই দেশে কোনোভাবে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের যোগাযোগ তৈরি করার চেষ্টা চলছে কি না।
মন্ত্রী বলেনঃ "এখানে আরও অনেক সমস্যা আছে। এত মানুষ আসছে, নির্যাতিত মানুষের সঙ্গে মাদকের স্রোতও আসছে কিনা এবং অস্ত্রের কোনো বিষয় যুক্ত হচ্ছে কিনা- এটা তো আমাদের জন্য আরও বেশি উদ্বেগের।”
উনি বলেন দেশের সরকার এই পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে মোকাবিলা করছে।
মন্ত্রী বলেনঃ "সরকারের অবস্থানে কোনো অস্পষ্টতা নেই। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। আমরা সতর্কতার সাথে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি।"
"যেভাবে রোহিঙ্গাদের স্রোত আমাদের দেশে ছুটে আসছে এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অলরেডি এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী চলে এসেছে," উনি বলেন।
“এই বিশাল বোঝা বয়ে বেড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আমরা হাওড় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত, বন্যার জন্য অর্ধেক এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এজন্য আমরা বারবার জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি," মন্ত্রী বলেন।
উনি বলেন নিরীহ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য মিয়ানমারকে বহুবার জানিয়েছেন ওনার সরকার।
“সন্ত্রাস দমনের নামে নিরীহ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য চার বার মিয়ানমারের প্রতিনিধিকে ফরেন অফিস ডেকে পাঠিয়েছে, আমাদের জোরালো বক্তব্য আমরা উত্থাপন করেছি,” মন্ত্রী বলেন।
বাংলাদেশ সরকার রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সহিংসতা ও চলমান সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মিয়ানমারের কাছে।
ঢাকায় দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত অং মিন্টকে আজ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
সেই সময় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী ওনার হাতে এই বিষয় ‘প্রটেস্ট নোট’ তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত নেওয়ার জন্য বলা হয় মিয়ানমারকে।
বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার সরকারকে বলেছেন যে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবার একবার বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিতিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনোকে এই আহ্বান করেছেন হাসিনা।
আজকে রিনা প্রিতিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওনার সাথে সাক্ষাৎ করতে যান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এই বৈঠকের বিষয় জানানঃ "মিয়ানমারের বিপুলসংখ্যক নাগরিককে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা। আমরা শুধু মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দিয়েছি।"
হাসিনা বলেন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
বিগত কয়েক বছর থেকে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বেড়েছে এই বিষয়টি তুলে ধরেন সোয়েমারনো।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ইন্দোনেশিয়া অংশীদার হতে চায়, উনি বলেন।
প্রসঙ্গত আগে, শেখ হাসিনা বুধবার যুক্তরাষ্ট্রকে অহবান করেছেন যে তারা যে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবশ বন্ধে মিয়ানমারকে চাপ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস গত সপ্তাহে হাসিনা এর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
সেই সময় হাসিনা এই কথাগুলি ওনাকে বলেছেন।
এই বৈঠকের বিষয় সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেনঃ "রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে মিয়ানমারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।"
এই বিষয়টিকে এক্ত 'বড় সমস্যা' বলে আখ্যা করেছেন হাসিনা।
“এই সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে কিনা- সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে’," এই বৈঠকের বিষয় আরও বলেন উনি।
হাসিনা বাংলাদেশের সরকারের সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতির কথাও বৈঠকের সময় তুলে ধরেন।