Bangladesh
রোহিঙ্গা সমস্যাঃ বাংলাদেশের পাশে আছে তুরস্ক
বেশ কিছু মাস ধরেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন লক্ষ্য লক্ষ্য রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশ সরকার বহুবার মিয়ানমারকে এই মানুষদের ফিরিয়ে নিতে বললেও লাভ কিছুই হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দেশের শীর্ষ নেতারা বহুবার দেখা করেছেন এই নিপীড়িত মানুষদের সাথে।
শুধুমাত্র মানবিকতার কথা মাথায় রেখে এই মানুষদের আজ পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ সরকার।
এতগুলি মাসে বহু দেশের নেতারা রোহিঙ্গাদের অবস্থান দেখতে এসেছেন বাংলাদেশে।
আর প্রত্যেকেই বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সফরে এসেছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম।
আজকে উনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন ও সেই সময় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ ভূমিতে ফেরত পাঠানোসহ দ্বিপক্ষীয় ও পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার এবং পরস্পরকে সমর্থন করার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেন।
“জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাসহ পারস্পরিক ও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি আমরা," যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
পারস্পরিক স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়েদুই দেশ এক সাথে কাজ করবে বলেও আজকের এই বৈঠকে সফররত বিদেশ নেতা একমত হয়েছেন, বিবৃতিতে বলেছেন হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে সফররত বিনালি ইলদিরিম জানিয়েছেন যে রোহিঙ্গা মানুষেরা যাতে নিজেদের দেশে ফিরতে পারেন সেই বিষয় কাজ করছেন তুরস্ক।
আজ হামিদের সাথে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা যাচ্ছে, এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রোহিঙ্গা বিষয় নেওয়া পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন।
আজ বঙ্গভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আজ সকল দেশ বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করবার পাশাপাশি হাসিনাকেও প্রশংসা করছেন।
ধার্মিকভাবে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবেও বাংলাদেশ আজ এক প্রতিক।
এই কথাটি বলেছেন স্বয়ং ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
ফ্রান্সিস বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করার ফলে পৃথিবীর কাছে একটি নজির হিসেবে তুলে ধরেছেন।
কিছুদিন আগে, তিনদিনের সফরে উনি বাংলাদেশ এসেছিলেন।
“বাংলাদেশ হল আন্তঃধর্ম ও ঐকতানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ," পোপ আজ বলেছেন।
উনি নিজের বক্তব্যে, মানুষের উদ্দেশ্যে বলেনঃ "কারও সম্পর্কে নিন্দা করা একটি মানুষের একটি ত্রুটি। পিছনে কথা বলা সমাজের শান্তি বিঘ্নিত করে। পরনিন্দা করা এক ধরনের সন্ত্রাসবাদ, কারণ যেমন পরনিন্দা আড়ালে হয়ে থাকে তেমনি সন্ত্রাসবাদও।"
আজ রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশ একাই লরে চলেছেন। মিয়ানমারকে বহুবার পালিয়ে আসা এই মানুষদের ফিরিয়ে নিতে বলা হলেও তারা বাংলাদেশের কথা শোনেনি।
তবে, এই লড়াইতেও, বাংলাদেশ পাশে পেয়েছেন বিদেশের নেতাদের।
এমনকি, ধর্মগুরু পোপ নিজেও পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের।
সফরে এসে, নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।
উনি শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য সকল বিশ্ববাসীকে আহ্বান করেছেন।
বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ধর্মগুরু এই কথাগুলি উনি বলেন।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মাটিতে চলা সমস্যার প্রসঙ্গটি তুলে ধরে, পোপ বলেনঃ "এটা ছোট কোনো বিষয় নয়, বরং পুরো বিশ্বের সামনেই এটি ঘটেছে। পুরো পরিস্থিতি, মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট এবং শরণার্থী শিবিরগুলোতে থাকা আমাদের ভাই-বোন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, তাদের ঝুঁকির গুরুত্ব বুঝতে আমরা কেউই ব্যর্থ হইনি।”
"কঠিন এই সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত," উনি বলেন।
উনি বলেন রাজনৈতিকের পাশাপাশি, বাংলাদেশে দ্রুত মানবিক সহায়তাও দিতে হবে।