Bangladesh

Bangladesh-Pakistan visa row escalates, Minister Momen blames Pakistan

Bangladesh-Pakistan visa row escalates, Minister Momen blames Pakistan

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 28 May 2019, 11:45 pm
ঢাকা, মে ২৮ঃ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের শীতলতা গত কিছুদিনে আরও বেড়েছে একে অপরের দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করবার অভিযোগে।

এই ঘটনার ফলে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে ধরা হচ্ছে।

প্রেস কাউন্সেলর মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বিষয়টিঃ সমস্যার সমাধান হয়নি

ফিরে যাওয়া যাক ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। সেই সময় ইসলামাবাদে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফিরতে গত জানুয়ারির শুরুতে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশের প্রেস কাউন্সেলর মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন এবং চার মাসেও এই বিষয়টির কোনও সমাধান হয়না।

সমাধান না হওয়ার ফলে পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য এই মাসের ১৩ তারিখ থেকে ভিসা দেওয়া বন্ধ করে ইসলামাবাদে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশন, সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর থেকে ১৩ মে পর্যন্ত ইকবাল হোসেন প্রেস কাউন্সেলরের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত ভিসা কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

ওনার ৩০ মার্চ ঢাকায় ফিরে আসার কথা ছিল।

গত ৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন উনি যাতে ওনার ও মেয়ের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়।

প্রথম আলো খবরের কাগজে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শেষ মুহূর্তের গোছগাছের জন্য বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান যেতে ঢাকায় তাঁর স্ত্রী ও ছেলে ভিসার আবেদন করেছিলেন পাকিস্তান হাইকমিশনে। 

এ বিষয়ে ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জানুয়ারির শুরুতে আবেদনের পর ভিসার মেয়াদ বাড়াতে বেশ কয়েকবার কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়েছিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে কি হবে না, কিছুই আমাকে জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আবার ঢাকায় আমার স্ত্রী ও ছেলে অন্তত তিনবার ভিসার জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ভিসা পাননি। ঢাকায় ফিরে যাব বলে গত ৩০ এপ্রিল সব মালপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। এমন এক অবস্থায়, আমার দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’

ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে খবরের কাগজটিকে বলেন, ভিসা নিয়ে এমন এক অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে ইকবাল হোসেন ১৩ মে হাইকমিশনার তারিক হাসানকে জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে ভারপ্রাপ্ত ভিসা কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। 


বাংলাদেশের মন্ত্রী কি বলেনঃ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবুল মোমেন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হয়নি।

“আমরা কারও ভিসা দেওয়া বন্ধ করিনি। কেউ কেউ ভিসা না-ই পেতে পারেন, যেটা সারা দুনিয়ায় হয়। কিন্তু আমরা পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করিনি," মন্ত্রি আজ সাংবাদিকদের বলেছেন।

  আবদুল মোমেন বলেন যে পাকিস্তানের দিক থেকে মূল সমস্যা।

গত এক সপ্তাহ ধরে ইসলামাবাদে বাংলাদেশী দূতাবাস পাকিস্তানিদের ভিসা দিচ্ছে না বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিবিসিকে  বলেন, "যে তথ্যটা বের হয়েছে পত্রিকায়, এটা শুডবি উল্টো যে পাকিস্তান আমাদের বাংলাদেশীদের কোন ভিসা দিচ্ছে না।"

মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমাদের দিক থেকে পাকিস্তানের কোন নাগরিকের ভিসা ডিনাই (প্রত্যাখ্যান) আমরা করি না। যারাই আবেদন করে, তাদেরই আমরা ভিসা দিই। ভেরিফাই করেই দিই। কিন্তু পাকিস্তান আমাদের সাথে অসহযোগিতা করছে।"

কী ধরনের অসহযোগিতা করছে তা জানতে চাইলে তিনি ব্রিটিশ এই গণমাধ্যমকে বলেন, পাকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাসের কনস্যুলার সেকশনে যাকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাকে পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভিসা না দেয়ায় তিনি তার স্টেশনে কাজে যেতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, তার অনুপস্থিতিতে প্রেস উইং কর্মকর্তাকে দিয়ে কনস্যুলারের কাজ করানো হচ্ছিলো। এখন তারও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি নতুন করে বেশ কবার ভিসার আবেদন করেছেন।

কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোন উত্তর দেয়া হয়নি বলে বিবিসিকে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মি. মোমেন আরও বলেন, তার পরিবার বাংলাদেশ থেকে তাকে পাকিস্তানে দেখতে যেতে চাইলে তাদেরকেও ভিসা দেয়া হয়নি।

আর বিষয়টি শুধু দুজন কূটনীতিকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, সাধারণভাবেই ভিসার ক্ষেত্রে পাকিস্তান 'অসহযোগিতা' করছে বলে বিবিসিকে জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিবিসিকে বলেন, "পাকিস্তানে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিমাণ তারা দিনে দিনে কমিয়ে ফেলছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্যেও ভিসা পাওয়া কঠিন হচ্ছে। তাই তাদের ব্যবসাও কমে গেছে"।

বাংলাদেশ এ ব্যাপারে পাল্টা কোন ব্যবস্থা নেবে কি-না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বাংলাদেশে এখন পাকিস্তানের জবাবের অপেক্ষায় আছে।"


সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে যে পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত বাংলাদেশ উপকমিশনারের পরিবার বর্গের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ এক বছরের উপর ধরে নবীকরণ হয়নি।


পাকিস্তান কি বলছেঃ


পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের উপরে এই সমস্যার দায় চাপিয়েছে।

দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের একজন কর্মকর্তা বিবিসির উর্দু সার্ভিসকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন যে ইসলামাবাদে বাংলাদেশের দূতাবাস গত সাত দিন যাবত পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে।

এমনকি দূতাবাসের ভিসা বিভাগটিই বন্ধ রাখা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বিবিসি উর্দুকে জানান, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিবাদ শুরু হয় যখন বাংলাদেশ ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাকলাইন সায়িদাহকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।


এর জবাবে পাকিস্তান সেদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে বিবিসি উর্দুর সংবাদদাতাকে বলেছেন ওই কর্মকর্তা।

ভিসা বিভাগ বন্ধ থাকার কারণ সম্পর্কে যা জানা গেছে, তাহলো পাকিস্তান বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিযুক্ত ভিসা কাউন্সিলরকে এখনো ভিসা দেয়নি, ফলে তা বন্ধ রয়েছে, বিবিস জানিয়েছে নিজের প্রতিবেদনে।