Bangladesh

Bengali Nabobrsho Yatra starts

Bengali Nabobrsho Yatra starts

| | 14 Apr 2018, 04:43 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, এপ্রিল ১৪ঃ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ শনিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত হলো নতুন বছর।

জীর্ণ-পুরাতনকে পেছনে ফেলে বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে নতুন উদ্যম ও সম্ভাবনার নতুন বছরে পা রাখলো বাঙালি জাতি। সব গ্লনি ঝেড়ে ভালো কিছুর প্রত্যাশায় নতুন বছরকে বরণ করে নেবে আবালবৃদ্ধবনিতা। 


বর্ষবরণের নানান অনুষ্ঠান আর আয়োজন দূর করবে সমাজের সব অসঙ্গতি।

 

শান্তি আর সম্প্রীতির বন্ধনে দৃঢ় হবে মানুষের সম্পর্ক। বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে বাঙালি একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নেয় আনন্দ।

 

বাংলা নববর্ষ উদযাপন এখন পরিণত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক বাঙালির একটি সর্বজনীন উৎসবে। এটাই আমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব।

 

ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের ভেদাভেদ ভুলে আজ সবার এক হওয়ার মিলনোৎসব। নববর্ষের দিনে উৎসবের আনন্দে শামিল হতে বেরিয়ে পড়ে সব বয়সী মানুষ। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বর্ষবরণের অনুষ্ঠানমালা।


‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ প্রতিপাদ্য ও মর্মবাণী ধারণ করে সম্পন্ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে আজ শনিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের দিন সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।


চারুকলার গেট দিয়ে বের হয়ে টিএসসি ঘুরে রূপসী বাংলা হোটেলের সামনের রাস্তা দিয়ে ফের চারুকলায় এসে শোভাযাত্রা শেষ হয়। 

 

সকাল ১০টার দিকে শোভাযাত্রা চারুকলায় ফিরে আসে। ঢাবি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হাজারো মানুষ অংশ নিয়েছেন এই শোভাযাত্রায়।


বাংলা ১৪২৫ সনকে বরণ করে নিতে রমনার বটমূলে আয়োজন করা হয় বর্ষবরণ অুনষ্ঠানের।

 

বাঁশিতে ভোরের রাগালাপ দিয়ে সূচনা হলো ছায়ানট আয়োজিত বর্ষবরণের ৫১তম আয়োজন।

 

রাজধানীর ঐতিহাসিক রমনার বটমূলে ভোর সোয়া ৬টায় এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। এবারের আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ‘বিশ্বায়নের বাস্ততায় শিকড়ের সন্ধান’। প্রায় দেড়শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণে দুই ঘণ্টার এই আয়োজন সাজানো হয় ১৬টি একক, ১২টি সম্মেলক গান আর ২টি আবৃত্তি দিয়ে।

 

সকাল সোয়া ৮টার দিকে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে ছায়ানট-সভাপতি সন্জীদা খাতুনের শুভেচ্ছা কথন দিয়ে।

 

বাংলাদেশে নববর্ষ আবাহনে মূল অনুষ্ঠান ধরা হয়ে থাকে ছায়ানটের আয়োজন। গানে ও সুরে নববর্ষের নতুন সূর্যকে আহ্বান জানায় সাংস্কৃতিক সংগঠনটি।  এবারও পয়লা বৈশাখে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্মিলিতভাবে সংগীত পরিবেশন করে নতুন বছরকে স্বাগত জানান ছায়ানটের শিল্পীরা। দিনের প্রথম প্রভাতেই রমনার বটমূলে তাদের সঙ্গে শামিল হন হাজারও শ্রোতা।

 


পহেলা বৈশাখে খাবারের পসরায় ও পোশাকে দেখা যায় বাঙালিয়ানা।

 

দিনের শুরুতে পান্তা-ইলিশ, এরপর ছেলেরা নানান রঙের পাঞ্জাবি আর লাল পাড়ের শাড়িতে মেয়েদের সাজগোজ বাংলা নববর্ষের অন্যতম অনুষঙ্গ।

 

বৈশাখ উপলক্ষে হোটেল- রেস্তোরায় পরিবেশন করা হচ্ছে বিভিন্ন পদের বাঙালি খাবার। মেলাগুলোতে থাকবে পিঠা উৎসব, পান্তা-ইলিশ, মুড়ি-মুড়কি, খৈ, বাতাসা ও বাঙালি খাবারের আয়োজন।

বৈশাখী আয়োজন


বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত নানান অনুষঙ্গের মধ্যে বর্ষবরণে আজ রাজধানীসহ দেশজুড়ে থাকছে লোকজ অনুষ্ঠান, বাংলা গান, নাচ, আবৃত্তি, কবিগান, নাটক, বৈশাখী মেলা, ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা, রাখি উৎসব, ঢাক উৎসব, বৈশাখী উৎসব, কাবাডি, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, পুতুল নাচ, হরগৌড়ি নাচ, বাইদান নাচের পালা, সাপের খেলা, ঘুড়ি উৎসব, নাগরদোলা, নৃত্য, জাদু, ঘোড়ার গাড়ি, পাপেট, গীতিনাট্য, মুখোশে ঢাকা কুটিরশিল্পসহ বিভিন্ন লোক-সাংস্কৃতিক ও উপজাতীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 


বৈশাখী মেলায় বিক্রি হবে মাটির পুতুল, বাঁশের বাঁশি, রঙিন বেলুন, ঢোল, ডুগডুগি, পুতুল, মুখোশ, ফিতা, পুঁতির মালা, কাচের চুড়িসহ রকমারি পণ্যসামগ্রী।