Bangladesh

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী

| | 14 Apr 2018, 09:00 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, এপ্রিল ১৪: রোহিঙ্গাদের ওপর যৌন সহিংসতা চালানোর দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ।

 নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো জাতিসংঘের মহাসচিবের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগাম হাতে পাওয়ার দাবি করে শুক্রবার এই খবর জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ‘সমষ্টিগতভাবে শাস্তি’ দেওয়ার কৌশলের অংশ হিসেবে এই যৌন নিপীড়ন চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও বৈঠকে এই প্রতিবেদন তুলে ধরা হবে। এতে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে যৌন সহিংসতার ওপর গুরত্বারোপ করা হয়েছে। এই তালিকায় আওতাভুক্ত করা হয়েছে ৫১টি সরকার, বিদ্রোহী ও চরমপন্থী গোষ্ঠীকে।


গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

 

নিরাপত্তা চৌকিতে বিদ্রোহী গ্রুপ ‘আরসা’র হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলে দাবি করা হয়।

 

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক প্রচারণার মাধ্যমে সেখানকার সমাজকে বিদ্বেষী করে তোলা হয়েছে।

 

আর সমাজের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়া সেই বিদ্বেষকেই রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের কারণ বলে বর্ননা করে সংস্থাটি।

 

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সমস্ত পথ বন্ধ করতে ‘আরসা’র হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল।


জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজ ওই প্রতিবেদনে বলেছেন, আন্তর্জাতিক চিকিৎসাকর্মীরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে অনেকের ওপর শারিরীক ও নৃশংস যৌন নির্যাতনের মানসিক ভীতি বহনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছেন।

 

তিনি বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী স্থানীয় মিলিশিয়াদের সঙ্গে যৌথভাবে এই নিপীড়ন ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ২০১৬ সালের অক্টোবর ও ২০১৭ সালের আগস্টে সামরিক বাহিনীর ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের’ সময় এসব নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

 


গুতেরেজ বলেন, এসব কর্মকান্ড রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিপীড়ন, ভয় দেখানো আর সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দেওয়ার কৌশলের অংশ ছিল।এই পূর্বনির্ধারিত নিপীড়নের মাধ্যমে তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করে তাদের ফেরার পথ বন্ধ করা হয়েছে।

 

যৌন সহিংসতার শিকার বেশিরভাগই ছিলেন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক নারী ও কিশোরী। দূরবর্তী ও গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করা এসব আক্রান্তদের সাহায্য পাওয়ার মতো সুযোগও ছিল না।


এর আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা।