Bangladesh

Danish lovers engaged in a different love

Danish lovers engaged in a different love

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 14 Sep 2018, 11:26 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, সেপ্টম্বর ১৫ : ১৯৭৭ সালে পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে হারিয়ে যায় ৬ বছরের এক শিশু।

চৌধুরী কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে ঢাকার একটি শিশু সদনে পৌঁছে দেন।

 

তাদের আশ্রয়ে থাকাকালে ডেনমার্কের এক নিঃসন্তান দম্পতি তাকে দত্তক নিয়ে যান।

 

নাম রাখেন মিন্টো কারস্টেন সোনিক। সেখানেই তার শৈশব-কৈশর কাটে। বিত্তবৈভবের মাঝে লেখাপড়া শিখে বড় হয়। মিন্টো এখন পেশায় চিত্র শিল্পী। ডেনমার্কেও নাগরিক এনিটি হোলমিহেভ নামে এক চিকিৎসককে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও মেয়ে জন্ম রয়েছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে বাবা-মা ও স্বজনদের খোঁজে পাবনা শহরসহ নগরবাড়ি এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন ডেনিশ নাগরিক মিন্টো কারস্টেন সোনিক ও তার স্ত্রী এনিটি হোলমিহেভ। বাংলায় লিফলেট লিখে জনে জনে তা বিলি করছেন। না, এখন পর্যন্ত মিন্টো তার বাবা-মাকে খুঁজে পাননি। তবে আপনজনের অভাব হচ্ছে না।


দীর্ঘ ৪১ বছর পর পাবনায় আসা মিন্টো ও তার স্ত্রী এনিটি হোলমিহেভকে নিয়ে আনন্দে মেতেছেন ‘আমরা পাবনাবাসী’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। তার বেদনাময় সফরকে কিছুটা আনন্দময় করতে শুক্রবার পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আড্ডার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতই মিন্টোকে পাঞ্জাবি ও গামছা এবং তার স্ত্রী এনিটিকে শাড়ি পরিয়ে বাঙালি বর-কনের বেশে সাজানো হয়।

 

দেয়া হয় সংবর্ধনা। এ সময় মিন্টো কারস্টেন সোনিক বলেন, ‘আমি যখন ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশে আসি তখন অনেকেই বলেছেন যে, বাংলাদেশিরা খুব খারাপ, ভয়ানক সন্ত্রাসী। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর আমার সেই চিন্তা-ভাবনা পাল্টে গেল। এদেশের লোকজন খুবই ভালো। আমি প্রতি বছর পাবনা আসবো এবং এখানে বাড়ি তৈরি করবো। আপনারা আমাকে অনেক আপন করে নিয়েছেন। আমি আমার স্বজনদের না পেলেও আপনারাই আমার আত্মীয়-স্বজন বলে মনে করি।’ তার স্ত্রী এনিটি বলেন, ‘আমি আপনাদের ভালোবাসা এবং সহযোগিতার আচার দেখে অভিভূত। মিন্টোর সঙ্গে মাঝে মধ্যে আমিও পাবনায় আসবো।’


এদিকে প্রায় প্রতিদিনই সন্তানের দাবি নিয়ে অনেকেই আসছেন মিন্টোকে দেখতে। কিন্তু বেশির ভাগ দাবিদারের বর্ণনার সঙ্গে মিল পড়ছে না। তবে কয়েকজনকে আমলে নেয়া হয়েছে এবং পুলিশের সহায়তায় তাদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে জানান মিন্টোর বন্ধু স্বাধীন বিশ্বাস।


স্বাধীন বিশ্বাস জানান, মিন্টোকে ১৯৭৭ সালে চৌধুরী কামরুল ইসলাম নামে যে ব্যক্তি উদ্ধার করে ঢাকায় হোমে পৌঁছে দেন তিনি এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। শিগগিরই তিনি দেশে আসবেন।

 

তিনি আসলে মিন্টোকেও আসতে বলা হবে। হয়তো এ সময় তার স্বজনদের পাওয়ার ব্যাপারে তিনি ভূমিকা রাখতে পারবেন। তিনি জানান, স্বজনদের পাওয়া না যাওয়ায় আপাতত ডেনমার্কে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিন্টো এবং তার স্ত্রী এনিটি। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা এখানে থাকবেন।