Bangladesh

Festival in Ramu

Festival in Ramu

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 26 Oct 2018, 05:48 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, অক্টোবর ২৬ : কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসা উৎসবকে ঘিরে বাঁকখালী নদীর দু’পাড়ে হাজারো নর-নারীর উপচে পড়া ভিড়ের সৃষ্টি হয়।

নদীতে ভাসানো হয় দৃষ্টিনন্দন কল্প জাহাজ। বাঁশ, বেত, কাঠ এবং রঙিন কাগজ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে তৈরী নদীতে ভাসমান এসব জাহাজে সৃষ্টি হয় বাঁধভাঙ্গা আনন্দ। বিশেষ করে শিশু-কিশোর ও যুবকরা নানা বাদ্য বাজিয়ে জাহাজে নাচে, গান গায়। আবার কোন কোন জাহাজে চলে বুদ্ধ কীর্তন- ‘বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘের নাম সবাই বলোরে, বুদ্ধের মতো এমন দয়াল আর নাইরে’। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী উৎসবের শেষ দিনে সম্প্রীতির জাহাজ ভাসানোর আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার এ আয়োজন উপলক্ষে বাঁকখালীর চরে আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়।


বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি, রামু সীমা বিহারের অধ্যক্ষ পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরো জানান, আজ থেকে দু’শ বছর আগে মিয়ানমারে মুরহন ঘা নামক স্থাানে একটি নদীতে মংরাজ ¤্রাজংব্রান প্রথম এ উৎসবেরর আয়োজন করেন। প্রবারণা পর্ণিমার একসাথে মিলিত হবার জন্য এ আয়োজন চলতো। সেখান থেকে বাংলাদেশের রামুতে এ উৎসবের প্রচলন। প্রায় শতবছর ধরে রামুতে মহাসমারোহে এ উৎসব হয়ে আসছে।


রামু উপজেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপুল বড়–য়া আব্বু জানান, দেশে শুধু রামুতেই এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। জাহাজ ভাসানোকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ এক মাস রামুর ৭টি বৌদ্ধ পল্লীতে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে এ উৎসব উদযাপিত হয়। রেঙ্গনী কারুকার্যে চূড়া, ময়ূর, হাঁস, সিংহসহ নানা জীবজন্তুর প্রতিকৃতির রূপ ফুটিয়ে তোলা হয় জাহাজে। বাঁশ, বেত, কাঠ, রঙিন কাগজ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে তৈরী জাহাজে ঈগল, ময়ূর, ঘোড়াসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি গড়ে তোলা হয়। ছয়-সাতটি নৌকাকে এক করে সেই নৌকার ভেলায় বসানো হয় এক একটি জাহাজ।


বৌদ্ধ নেতারা জানান, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সূত্র পাঠ শেষে দুপুর দুইটার দিকে জাহাজ ভাসানো উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে চলে এই আনন্দ আয়োজন। তারা আরো জানান, এ বছর রামু উপজেলার মেরংলোয়া কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহার, পূর্ব রাজারকুল, পূব মেরংলোয়া, দ্বীপ শ্রীকুল, হাজারীকুল, হাইটুপী, রাখাইন পাড়া বড় ক্যাং এলাকা থেকে মোট সাতটি কল্পজাহাজ নদীতে ভাসানো হয়।