Bangladesh

First Rohingya Family Returns to Myanmar

First Rohingya Family Returns to Myanmar

| | 15 Apr 2018, 06:09 am
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, এপ্রিল ১৫: বাংলাদেশ থেকে ৫ সদস্যের এক রোহিঙ্গা পরিবারকে শনিবার ফিরিয়ে নিয়েছে নেপিদো।

প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইন এখনও প্রস্তুত নয় বলে জাতিসংঘের মন্তবের পর এই উদ্যোগ নেয়া হয়।

মিয়ানমার সরকারের এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।


দুই বছরে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা নেপিদো প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই উদ্যোগ বাস্তায়নে মিয়ানমার রাখাইনে দুটি অভ্যর্থনাকেন্দ্র স্থাপন করেছে। এগুলোকে অস্থায়ী শিবির নামে ডাকছে মিয়ানমার। তবে সেখানে বহুল প্রতীক্ষিত ও বিরল সফর শেষে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদেও প্রত্যাবাসনের জন্য এখনও তৈরি নয় রাখাইন।

 

সরেজমিন বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখে এবং সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল উরসুলা মুয়েলার এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

 

৬ দিনের সফর শেষে উরসুলা মুয়েলার সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতূলতা, নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আর অব্যাহত স্থানচুত্যির ঘটনা ঘটছে ধারাবাহিকভাবে।

 

এই পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার জন্য সহায়ক নয়। ভবিষ্যতেও প্রত্যাবাসন আদতে সম্ভব কিনা, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। তবে জাতিসংঘের এই সংশয়কে আমল না নিয়ে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তির অংশ হিসেবে প্রথম রোহিঙ্গা পরিবারকে ফিরিয়ে নিলো।


রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করতে শুরু থেকেই অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে মিয়ানমার। তাদের 'বাঙালি মুসলমান' আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের বাসিন্দা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় নেপিদো। শনিবার মিয়ানমার সরকারের এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের মুসলিম আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘৫ সদস্যের এক মুসলিম পরিবার আজ সকালে রাখাইনের তানজিপিওলেটওয়া অভ্যর্থনাকেন্দ্রে এসেছে।’ ওই সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, অভিবাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে। সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের চাল, মশারি, কম্বল, গেঞ্জি, লুঙ্গি সরবরাহ করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।


রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার চলমান প্রক্রিয়ায় তাদের নিবন্ধনের অংশ হিসেবে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড-এনভিসি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমার।

 

তবে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব পর্যায় থেকে এই কার্ডকে নাগরিকত্ব অস্বীকার করে রোহিঙ্গাদের আজীবনের জন্য শরণার্থী করে রাখার পাঁয়তারা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকারের শনিবারের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রত্যাবাসনের জন্য যাচাই-বাছাই শেষে ওই পরিবারকে মিয়ানমারে প্রবেশের আগেই এনভিসি কার্ড দেওয়া হয়েছে।


নিউ ইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, সমস্যাগুলোর একটি হলো সহিংসতার সময় খালি হওয়া কমপক্ষে ৫৫টি গ্রাম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সংকট মোকাবিলাবিষয়ক পরিচালক তিরানা হাসান মার্চে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীকে বিপুল পরিমাণে জমি দখল করতে দেখা গেছে।

 

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারী সেই একই নিরাপত্তা বাহিনী এখন ঘর তৈরির জন্য নতুন ঘাঁটি স্থাপন করেছে। আর তা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনকে আরও বেশি দুরাশায় পরিণত করে দিচ্ছে।

 

Image: Internet Grab