Bangladesh
Jahalam gets freedom from prison
বিনা অপরাধে তিন বছর কারাভোগের পর রবিবার মধ্যরাতের পর মুক্তি পান তিনি। মুক্তি পেয়ে ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তখনই টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন জাহালম।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, এ কারাগারে বন্দি জাহালম ওরফে জানে আলমকে হাইকোর্টের নির্দেশে রবিবার রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে তাকে দেওয়া আদালতের মুক্তির আদেশ মহা-কারাপরিদর্শকের দপ্তরের মাধ্যমে রাত ১২টা ৫মিনিটের দিকে কাশিমপুরের এই কারাগারে পৌঁছে। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার জাহালমকে মুক্তির ওই আদেশ দেন।
জাহালম টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবুরিয়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। কারামুক্তির পর বড় ভাই শাহানুর মিয়ার সঙ্গে ভোর ৪টায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান তিনি। রাতের আঁধারে মোবাইলের আলোয় জাহালমকে দেখেই ছুটে আসেন মা মনোয়ারা। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি এবং স্বজনরা।
পরে ছেলের কপালে চুমু দিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, ‘কার মাথায় বাড়ি দিছিলাম যে আমার এত বড় সর্বনাশ করছিল।’ এ সময় আহাজারি করেন জাহালমের ভাইবোন ও স্বজনরাও। পরে কারামুক্ত জাহালমকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তোলেন মা মনোয়ারা।
উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে বিনাদোষে তিন বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছে নরসিংদীর পাটকল শ্রমিক টাঙ্গাইলের সন্তান জাহালমকে। রোববারই সোনালী ব্যাংকের ওই অর্থ জালিয়াতির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে হাইকোর্ট তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন। কারাগারে কাগজ পৌঁছানোর পর জেল সুপার তাকে মুক্তি দেন।
জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা দায়ের করে দুদক। পরে ওই মামলায় ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সালেকের পরিবর্তে জাহালমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ওই বছরের ২৭ মে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনায় আগামী সপ্তাহে দায়ি ব্যক্তিদের শাস্তি এবং জাহালমকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য আদালত থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসতে পারে।