Bangladesh
Jamal and freedom
সমুদ্র পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় মানবপাচার করতেন তিনি। জিম্মি করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে আদায় করতেন নগদ অর্থ। তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পর ভুক্তভোগীর মুক্তি মিলতো। গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এভাবে ২ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন জামাল।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার তদন্তে মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়ার পর, মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা জামালকে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছে সিআইডি।
এ ব্যাপারে সিআইডির এএসপি (মিডিয়া) শারমিন জাহান বলেন, জামালের ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত শাখার উপ-সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান সরেজমিনে অনুসন্ধান করেন। মানবপাচারে সম্পৃক্ততা ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের মামলায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট জামালকে গ্রেফতার করে। সিআইডির তদন্তে তার বিরুদ্ধে মানবপাচার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। এ সপ্তাহেই জামালের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা জানান, অনুসন্ধানে জানা যায়, মানবপাচারের মতো অপরাধ করে অর্জিত অর্থের মধ্যে (হিসাব নং-২০৫০১৪৭০১০০৩১৩৪১০) ২০১৪ সালের ২৩ মে থেকে ২০১৫ সালের ১৪ মে পর্যন্ত ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা টেকনাফের ইসলামী ব্যাংক শাখায় জমা করেন জামাল। বিভিন্ন তারিখে চেকের মাধ্যমে ওই টাকা উত্তোলন করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, জামাল হোসেন ২০১৩ সালের শেষ দিকে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং মানবপাচার-সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন শুরু করেন।
শারমিন জাহান বলেন, জামাল হোসেন বিভিন্ন জেলার লোকজনকে সমুদ্র পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে টাকা আদায় করতেন। আবার জিম্মি করেও টাকা আদায় করতেন তিনি।
জামালের বিদেশে লোক পাঠানোর বৈধ লাইসেন্স নেই। জিম্মি অবস্থায় অথবা আটকা পড়া ভুক্তভোগীদের পরিবার তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর পর ছাড়া পেতেন। এভাবে এক বছরেই (২৩ মে ২০১৪ থেকে ১৪ মে ২০১৫) ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। এছাড়া মামলার তদন্তকালে জামালের বিরুদ্ধে টেকনাফ, নরসিংদী ও রামু থানাসহ বেশ কয়েকটি থানায় একই অপরাধে একাধিক মামলার খবরও মিলেছে।