Bangladesh
Janmashtami celebrations: Devotees pray for relief from Covid-19 pandemic
প্রতিবছর দেশের সনাতন হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে জন্মাষ্টমী উদযাপন করেনন করেন। তবে এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠান যথারীতি ধর্মীয় রীতি অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে পালিত হয়েছে। সকল অনুষ্ঠানমালা মন্দিরাঙ্গনে সীমাবদ্ধ ছিল। সমাবেশ, শোভাযাত্রা বা মিছিল এবার হয়নি।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ছিল সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে এদিন বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়্
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৬ মিনিট থেকে শুরু করে আজ বুধবার বেলা ১১টা ১৬ মিনিট পর্যন্ত জন্মাষ্টমী তিথি থাকায় অনেকে আজ জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন।
সকাল থেকে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে জাতীয় মন্দির ঢাকেশ্বরী প্রাঙ্গণে শুরু হয় গীতাযজ্ঞ। রাতে অনুষ্ঠিত হয় কৃষ্ণ পূজা। সকালে অনুষ্ঠিত গীতাযজ্ঞ পরিচালনা করেন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। তিনি বলেন,ভগবান যুগে-যুগে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য আবির্ভূত হয়েছেন। এই করোনাভাইরাস মহামারীকালে আমরা আজ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করছি। তিনি জরা, ব্যাধিমুক্ত এক পৃথিবী আমাদের দেবেন। আমাদের দেশসহ পৃথিবীর সব মানুষকে করোনা মহামারি থেকে রক্ষা করবেন।
তিনি বলেন, ‘অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে তিনি গোটা বিশ্বকে মুক্ত করবেন। মহামারীকাল শেষ হলে মানুষে মানুষে প্রীতি ও সদ্ভাবে গোটা পৃথিবী সুন্দরতম হয়ে উঠুক, আজ সে প্রার্থনা করেছি’ ।
ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠে এ উপলক্ষে সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত গীতা পাঠের আয়োজন করা হয়। গীতা পাঠ করেন স্বামী দেবধ্যানানন্দ ও ব্রক্ষ্রচারী ভাস্কর। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভজন, দুপুরে মধ্যাহ্নে প্রসাদ বিতরণ, রাত ৭ টা ৪০ মিনিটে গুরু মহারাজের বাণীবর্চন ও রাত ৮ টায় শ্রীকৃষ্ণ পূজা। বিভিন্ন মঠ মন্দির ছাড়াও রাতে ঘরে-ঘরে অনুষ্ঠিত হয় কৃষ্ণ পূজা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সাড়ে পাঁচ হাজার বছরেরও আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে অশুভ শক্তিকে দমন করে সত্য ও সুন্দরের প্রতিষ্ঠায় ধরাধামে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। তাঁর আবির্ভাব বিশ্বের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করে। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষকে রক্ষায় তিনি পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেন, অন্ধকার সরিয়ে পৃথিবীকে আলোয় উদ্ভাসিত করেন।
তাদের আরো বিশ্বাস, তিনি অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় ভালো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন। দুষ্টের দমন করতে একই ভাবে যুগে-যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন এবং সত্য ও সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন।