Bangladesh

Mamun murdered

Mamun murdered

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 12 Apr 2019, 07:39 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, এপ্রিল ১২ : বিভিন্ন অপরাধমূলক নাটকে অভিনয়ের সূত্র ধরে যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল, তাদের ফাঁদে পড়েই পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান খুনন হয়েছিলেন। গোয়েন্দা পুলিশের অভিযোগপত্রে এ তথ্য জানা যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান মোট দশজনকে আসামি করে গত ৮ এপ্রিল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র দেন। আসামিরা হলেন- রবিউল ইসলাম (৩০), রবিউলের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া (২১), মামুনের বন্ধু রহমতউল্লাহ (৩৫), স্বপন সরকার (৩৯), দিদার পাঠান (২১), মিজান শেখ (২১), আতিক হাসান (২১), সারোয়ার হোসেন (২৩) এবং দুই কিশোরী।


অভিযোগপত্রে বলা হয়, রবিউল ইসলামের  নেতৃতে ¡বিত্তবানদের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করত একটি চক্র। তাদের লক্ষ্য ছিল রহমতউল্লাহকে আটকে ‘অশালীন’ ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে টাকা আদায় করা। সেজন্য তারা জন্মদিনের নাটক সাজিয়ে রহতুকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল বনানীর এক বাসায়।
বন্ধু রহমতের ডাকে ২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীর ওই বাসায় গিয়ে খুন হন এসবির পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরদিন মামুনের মৃতদেহ বস্তায় ভরে উলুখোলার জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পোড়ানো হয় অপরাধের চিহ্ন গোপন করার জন্য।


তিন দিন পর সেখান থেকে পরিদর্শক মামুনের পোড়া লাশ উদ্ধার হলে তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে হত্যাকা-ের পুরো বিবরণ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টেলিভিশনে একটি ক্রাইম ফিকশনে অভিনয়ের সূত্র ধরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার রহমু উল্লাহর সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের। নাটকের সূত্রেই তাদের সঙ্গে এক কিশোরীর পরিচয় হয়, যে রবিউলের চক্রের একজন সদস্য।  রবিউলের স্ত্রী কেয়াকে ওই কিশোরী জানায়, রহমত উল্লাহকে ফাঁদে ফেলে মোটা টাকা আদায় করা সম্ভব। সে অনুযায়ী তৈরি হয় জন্মদিনের নাটকের ছক। ২০১৮ সালের ৮ জুলাই সন্ধ্যায় বনানীর এক বাসায় ওই কিশোরীর ‘জন্মদিনের অনুষ্ঠানে’ দাওয়াত দেওয়া হয় রহমতউল্লাহকে। দাওয়াত পেয়ে রহমতউল্লাহ তার বন্ধু মামুনকেও সঙ্গী হতে অনুরোধ জানায়। তারা ওই বাড়িতে পৌঁছালে ওই কিশোরী দুজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে বাইরে আসে। তাদের একজনকে বোন, অন্যজনকে ভাবি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে রহমতউল্লাহ ও মামুনকে বাসার ভেতরে নিয়ে যায়।


বাসায় গিয়ে তারা (রহমতউল্লাহ ও মামুন) দেখেন, জন্মদিনের কোনো আয়োজন নেই। রহমতউল্লাহ তখন ওই কিশোরীকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোমাদের নাকি বার্থডে পার্টি, কিন্তু কিছু তো দেখছি না।’ রবিউলের স্ত্রী কেয়া তখন বলেন, ‘প্রতিদিন আমাদের পার্টি এরকমই হয়। একটু পরই দেখতে পাবেন’। কেয়া ওই ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর স্বপন, দিদার, আতিক ও মিজান ঘরে ঢোকেন। শুরু হয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। তারা মামুন ও রহমতের উদ্দেশে বলে, ‘বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে তোরা এখানে এসেছিস।’ মামুন প্রতিবাদ করলে সঙ্গে সঙ্গে ওই চারজন তাকে মারতে শুরু করে।