Bangladesh
Masud touches human hearts with his act
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৭ জানুয়ারি) শীতের সন্ধ্যায় গ্রামীণ ফোন সেন্টারের সামনে ফুটপাতে নালার পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী জন্ম দেন ফুটফুটে এক শিশুর। এ ঘটনা দেখে আশপাশে মানুষ ভিড় করলেও এগিয়ে আসেননি কেউ। অথচ মায়ের নাড়িতে জড়িয়ে থাকা শিশুটি গড়াগড়ি দিচ্ছিল ফুটপাতের ধুলোয়। লোকমুখে সে খবর পেয়ে ছুটে আসেন দেওয়ানহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই ) মাসুদুর রহমান। অন্যদের মতো দর্শকের ভূমিকা না নিয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকা মা ও শিশুকে দ্রুত নিয়ে যান হাসপাতালে। সেখানে কাটা হয় নাড়ি। ফলে প্রাণে বেঁচে যায় মা ও শিশু।
সর্বশেষ মানসিক বিকারগ্রস্থ ওই মহিলার স্বামীর খোঁজ মিলেছে। তার নাম ইসমাইল (৩৫)। পেশায় হোটেল শ্রমিক। ইসমাইল নিজেও একজন ভবঘুুরে। নবজাতকের মা মানসিক ভারসাম্যহীন রোজিনা জানান, কয়েক বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তার স্বামীর নাম ইসমাইল। তিনি হোটেলে কাজ করেন। তার ভরণপোষণা না দেয়ায় তিনি স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছেন।
তবে স্বামী ইসমাইলের দাবি, ২০০১ সালে তাদের বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তান আছে। কিন্তু বিয়ের পরে তার স্ত্রী রোজিনার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এরপর থেকে তিনি বাসায় থাকেন না। বাসার সবকিছু তছনছ করে রাস্তায় চলে আসেন। কিছু দিন আগেও নিজে হোটেল শ্রমিক হিসেবে কাজের পাশাপাশি নিজেদের জন্য নগরের ধোপার দীঘির পাড় এলাকায় বাসা নিয়েছিলেন। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন রোজিনা বারবার বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এ কারণে তাদের ভাড়া বাসা থেকে বের করে দেন বাড়ির মালিক।
এদিকে নবজাতক ও প্রসূতির প্রাণ বাঁচানো উপ-পরিদর্শক (এস আই) মাসুদুর রহমান বলেন, সোমবার সন্ধ্যার একটু পর আমার দুই কলিগ (সহকর্মী) ও স্থানীয়দের কাছে পাগলীর ফুটপাতে সন্তান প্রসবের খবর পাই। দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দেখি হৃদয়বিদারক দৃশ্য। সঙ্গে সঙ্গে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়ে মা ও শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তাররা বলেন, হাসপাতালে নিতে যদি আধাঘণ্টা দেরি হত শিশুটির প্রাণ বাঁচানো যেত না।
শুধু নবজাতক ও মাকে উদ্ধার করেই ক্ষান্ত হননি মাসুদুর রহমান। এখন নিয়মিত হাসপাতালে দেখাশোনাও করছেন তিনি। মা ও শিশুর জন্য এনে দিয়েছেন নতুন কাপড় ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।