Bangladesh

New York Times says poor were victims of rich in Chaawk bazaar fire incident

New York Times says poor were victims of rich in Chaawk bazaar fire incident

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 24 Feb 2019, 08:35 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২৪: চকবাজারে আগুন থেকে সৃষ্ট ভয়াবহ ট্র্যাজেডির নেপথ্যে ধনীদের লোভকেই প্রধান কারণ হিসেবে শনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস। চুড়িহাট্টায় ২০ ফেব্রুয়ারির (বুধবার) আগুনে পুড়ে এরইমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ জন।

এ সংক্রান্ত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, দারিদ্র্য আর ঘনবসতি নয়, পুরান ঢাকার আবাসিক ভবনে মজুত করে রাখা অনুমোদনবিহীন রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থই এই বিপুল পরিমাণ প্রাণহানীর জন্য দায়ী। মুনাফার স্বার্থে ধনী ব্যবসায়ীরা কখনও ঘুষ দিয়ে, কখনও আবার গোপনে আইন ভঙ্গ করে প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের মতো দ্রব্য আবাসিক ভবনে রেখে দেয়। অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, চকবাজারের বাসিন্দারা ধনীদের ওই লোভের আগুনেই পুড়ে মরেছেন।


নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার (২০  ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে দশটার পর যখন চকবাজারে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে তখন সংশ্লিষ্ট রাস্তাটিতে তিল ধারণের স্থান ছিল না। চারিদিকে মানুষ, গাড়ি, মোটরসাইকেল। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি গাড়ির সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে থাকে। একব পর্যায়ে একটি হোটেলে রান্নার গ্যাস রাখা সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়। পাশেই একটি ছোট দোকানে অনুমোদনবিহীনভাবে রাখা ছিল রাসায়নিক। মুহূর্তেই সেখানে ধরে যায় আগুন। দোকানের পাশের একটি আবাসিক ভবনে রাখা ছিল বডি স্প্রের হাজার হাজার বোতল। বিস্ফোরিত হতে শুরু করে সেগুলোও। এভাবেই হু হু করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা ট্রিবিউনের নিজস্ব অনুসন্ধান থেকেও জানা গেছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ৫টি ভবনের গোডাউনেই কেমিক্যাল ছিল। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ আবাসিক এলাকায় বেআইনিভাবে রাখা ওইসব দাহ্য পদার্থকে সেলফ্ মেইড এক্সপ্লোসিভ (নিজ থেকেই বিস্ফোরকে পরিণত হওয়া) আখ্যা দিয়েছেন।


নিউ ইয়র্ক টাইমস বাংলাদেশকে এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ আখ্যা দিলেও তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই দারিদ্র্য কিংবা অতিরিক্ত জনসংখ্যা দিয়ে চকবাজারের আগুনের সামগ্রিক পটভূমি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব না। ঢাকার একজন স্থপতি নাজিম উদ্দিন আহমেদ ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটা দারিদ্র্যের ব্যাপার নয়, লোভের পরিণতি। যারা আবাসিক ভবনগুলোতে রাসায়নিক পণ্য মজুত রাখে, তারা আসলে অনেক ধনী। তাদের গাড়ি আছে। সুন্দর বাড়ি আছে। তাদের ছেলে মেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করে।’


প্রতিবেদনে ৮ বছর আগের প্রায় একই ধারার একটি আগুন ট্রাজেডি তুলে ধরা হয়েছে। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে একটি ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল এক আবাসিক ভবনে। অনুমোদন ছাড়াই ওই ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্য রাখা হয়েছিল। এবারের মতো ওই সময়েও সেখানে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছিল অপ্রশস্ত রাস্তায় বিপুল যানজটের কারণে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ওই ঘটনার পর সরকারি কর্মকর্তারা বিল্ডিং কোড মেনে চলার বিষয়ে শক্ত অবস্থান নেওয়ার অঙ্গীকার করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।