Bangladesh

Nusrat's death will be remembered: Court

Nusrat's death will be remembered: Court

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 25 Oct 2019, 12:04 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, অক্টোবর ২৫ : ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেমকে তিরস্কার করেছেন আদালত। একই সঙ্গে সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বিচারক।

বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব কথা বলেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, এ ঘটনায় তৎকালীন ওসি গাফিলতি করেছেন। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কর্মকান্ড না ঘটে, সে ব্যাপারে সবাই সতর্ক হবেন। হত্যাকান্ডের বিষয়টি মানুষের সামনে আনার জন্য সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।


বিচারক মামুনুর রশিদ বলেন, নারীত্বের মর্যাদা রক্ষায় নুসরাত জাহান রাফির তেজোদীপ্ত আত্মত্যাগ তাকে অমরত্ব দিয়েছে। নুসরাতের অমরত্ব চিরকালের অনুপ্রেরণা। আসামিদের ঔদ্ধত্য মানবতাকে লজ্জিত করবে চিরকাল। নুসরাত হত্যার রায়ে বিচারক বলেন, নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। নূর উদ্দিন হত্যার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করেন। শাহাদাত হোসেন শামীম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে মুখ ও মাথা চেপে ধরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন। সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১০ হাজার টাকা দেন এবং হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন।


পাশাপাশি সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের এবং জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ নুসরাতের ওড়না দুই ভাগ করে হাত-পা পেঁচিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন দেন। মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার পর আসামিদের ঘটনাস্থল ত্যাগে সহযোগিতা করেন। প্রভাষক আবছার উদ্দিন মাদরাসার গেটের পাহারায় থেকে আসামিদের নিরাপদে পার করে দেন।


সহপাঠী কামরুন নাহার মনি সাইক্লোন শেল্টারের ফ্লোরে নুসরাতকে শুইয়ে বুক চেপে ধরেন এবং শরীরে আগুন দিতে সহযোগিতা করেন। সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী নুসরাতকে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নেন এবং ওড়না খুলে পা ধরে শরীরে আগুন দিতে সহযোগিতা করেন।


এছাড়া আব্দুর রহিম শরীফ, ইমরান হোসেন মামুন ও ইফতেখার উদ্দিন রানা ঘটনার সময় মাদরাসার গেটের বাইরে পাহারায় থেকে অন্যদের নিরাপদে ঘটনাস্থল ত্যাগে সহযোগিতা করেন। মোহাম্মদ শামীম, মহিউদ্দিন শাকিল ঘটনার সময় সাইক্লোন শেল্টারের নিচে পাহারার দায়িত্ব পালন করে অন্যদের সহযোগিতা করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমীন হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন।


এসব বিষয় প্রমাণিত হওয়ায় ১৬ আসামির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ-াদেশ কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হলো। জরিমানার অর্থ আদায় করে ভিকটিমের বাবাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেয়া হলো।