Bangladesh

Quota Reform: Several protesters continue their demonstration

Quota Reform: Several protesters continue their demonstration

| | 09 Apr 2018, 10:47 am
ঢাকা, এপ্রিল ৯ঃ চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ সরকারের আশ্বাসে পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে সোমবার এখনও নিজেদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারা এই মুহূর্তে অবস্থান করছেন শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায়।

 

তারা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন যে সকলে এই  আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত  হতে পারেনি ও ওনারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

 

শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা তাদের চলতে থাকা সরকারি চাকরির বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাসের পর স্থগিত করা হয়েছে।

 

‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে আন্দোলনরতদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল আজ ঢাকায় বৈঠক করে।

তারপরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

এই প্রতিবাদ গতকাল থেকে বিধ্বংসী হয়ে যাওয়ার পর সরকার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত করে।

 

আন্দোলনকারীদের দাবি কাদের জানান সরকার ইতিবাচক ভাবেই দেখবে।

 

বৈঠকের শেষে, ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানানঃ "সরকার রিজিড অবস্থানে নেই। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা ইতিবাচক ভাবেই দেখব।”

 

“মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে সরকার রিভিউ বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে। রেজাল্ট কী আসে আমরা সেটা জানিয়ে দেব।… তারা কথা দিয়েছেন, ওই পর্যন্ত তারা তাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত রাখবেন," উনি জানান।

 

“আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হল," কাদের বলেন।

 

"এখন পর্যন্ত আমার যে সকল ভাই বোনেরা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের সকলকে নিশর্তভাবে মুক্তি দেওয়া হবে এবং পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার," উনি বলেন।

 

সরকারি চাকুরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে রোববার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে শুরু হওয়া আন্দোলন সোমবার সকালে শান্ত হয়।

 

এরআগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশ এবং আন্দোলনরতদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ চলে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং ফাঁকা গুলি চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

 

অপরদিকে আন্দেলনকারিরাও পুলিশের ওপর পাল্টা হামলা চালায়।

 

রাত দেড়টার দিকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী একজোট হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র বাড়িতে হামলা চালায়। এর প্রেক্ষিতে ভোর রাতে পুলিশ শহীদুল্লাহ হলে অভিযান চালায়।

 

এরপরই সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ তীব্রতর হওয়া এই আন্দেলন সরকারকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।

 

তাদের ধারণা স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবিররা এই আন্দেলনের করকাঠি নাড়ছে।

 

এ ব্যাপাওে সুনির্দিষ্ট কিছু আলামত পাওয়া গেছে। গোটা বিষয়ঠি খতিয়ে দেখার জন্য রাতেই যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

শুধু রাজধানী নয়, সারাদেশে কোটা সংস্কারের ৫ দফা দাবিতে রোববার দুপুর থেকে রাজপথ অবরোধের আন্দোলনে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

 

তাদের অভিয়োগ সরকারি চাকুরিতে ৫৬ থেকে ৯৬ ভাগ নিয়োগ কোটার ভিত্তিতে হচ্ছে।

 

এতে মেধাবি ছাত্ররা বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া এ ধরণের নিয়োগে একটি বিকলাঙ্গ প্রশাসন গড়ে উঠছে, যা জাতির ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর। আন্দেলনকারিরা সর্বোচ্চ ১০ ভাগ কোটায় নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মোট জনসংখ্যার এক দশমিক ২ শতাংশ ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জন্য শতকরা ৫ ভাগ, এক দশমিক ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধীর জন্য এক ভাগ, দশমিক ১৩ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পোষ্যদের জন্য শতকরা ৩০ ভাগ অর্থাৎ মাত্র ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ নাগরিকের জন্য রয়েছে ৩৬ শতাংশ কোটা। এছাড়া জেলা কোটা ১০ শতাংশ এবং নারী কোটা ১০ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট কোটা ৫৬ শতাংশ। তৃতীয় ও তার নিচের পদবির পদগুলোতে কোটা বৈষম্য আরও বেশি।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরিতে শতকরা ৭০ শতাংশ কোটা। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ শতাংশ, নারী কোটায় ১৫ শতাংশ, উপজাতি ৫ শতাংশ, আনসার ও ভিডিপিতে ১০ শতাংশ ও প্রতিবন্ধী কোটায় ১০শতাংশ। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৯৬ শতাংশ, রেলওয়েতে ৮২ শতাংশ কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়।

রেলওয়েতে ৪০ শতাংশ পোষ্য কোটার নজীরবিহীন বৈষম্য রয়েছে। অবশিষ্ট ৬০ শতাংশের মধ্যে নারী ১০ শতাংশ,মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশ, উপজাতি ১০ শতাংশ এবং আনসার ভিডিপি ১০ শতাংশ কোটা নির্ধারিত।


এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিয়োগে ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা। এই আনুপাতিক হারের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কোটা বিধির অন্যান্য কোটা যেমন মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ, উপজাতি ৫ শতাংশ, আনসার ভিডিপি ১০ শতাংশ ও প্রতবন্ধী ১০ শতাংশকে নারী ও পুরষভেদে বন্টন করা হয়।