Bangladesh

Syed Ashraf nearing death

Syed Ashraf nearing death

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 05 Nov 2018, 07:30 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, নভেম্বর ৫ : জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন।

তার অবস্থা খবই সংকটজনক। ক্যান্সার চতুর্থ স্টেজে রয়েছে। তার শরীর ভেঙ্গে পড়েছে এবং তিনি কাউকেই চিনতে পারছেন না। এই অবস্থা সুস্থ্য হয়ে ওঠার সম্ভবনাও দিন দিন কমে আসছে। উল্লেখ্য, গত বছর সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শিলা ঠাকুরও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।


আশরাফের বাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ শাফায়াতুল ইসলাম জানান, তার রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা ‘খুবই কম’। সৈয়দ আশরাফ এখন থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। গুরুতর অসুস্থতার কারণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নেন তিনি। কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য আশরাফের আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়া-না নেওয়া নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে শাফায়াত রোববার কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে ভাইয়ের গুরুতর অসুস্থতার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গুরুতর অসুস্থ। তিনি ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছেন। পরিবারের সদস্য এমনকি নিজ মেয়েকেও চিনতে পারছেন না। এ পরিস্থিতিতে এ সময়ে তার রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। আমরা এখন রাজনীতি নয়, তার চিকিৎসার দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। যারা বলছেন সৈয়দ আশরাফ দ্রুত সুস্থ হয়ে রাজনীতিতে ফিরে আসছেন তাদের কথা ঠিক নয়।’ আশরাফকে নিয়ে অহেতুক গুজব না ছড়িয়ে তার জন্য দোয়া করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।


কিশোরগঞ্জের ওই আসনটিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা শাফায়াতও একবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম হত্যাকা-ের পর দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে থাকা আশরাফ দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পুনঃনির্বাচিত হন তিনি। জরুরি অবস্থা জারির পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের হাল ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জনের পর এক দশক আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আশরাফ।


২০০৯ থেকে নানা ঘটনা এবং ২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনের মধ্যে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার পাশাপাশি আশরাফের ভূমিকার কথাও গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করেন দলটির কর্মীরা। ২০০৯ সাল থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আশরাফ। দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারানোর সঙ্গে মন্ত্রী হিসেবে তার দপ্তরও বদল হয়। তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন শেখ হাসিনা। দলে সভাপতিম-লীর সদস্য করা হয় তাকে। গত বছর স্ত্রী শিলা ইসলামের মৃত্যুর পর নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন ৬৮ বছর বয়সী আশরাফ। এখন তিনি হাসপাতালে শয্যাশায়ী।


জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভাইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে শাফায়াত বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফ একজনই, তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। একদিন বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা হবে; তখন তিনি সৈয়দ নজরুলকে ছাড়িয়ে যাবেন। তিনি হবেন ইতিহাসের মহানায়ক।’


কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জেল হত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শাফায়াত। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন খানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামরুল আহসান শাহজাহান, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সুলতানা রাজিয়া প্রমুখ।