Bangladesh

মিয়ানমারের নৃশংসতার তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমারের নৃশংসতার তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 26 Apr 2018, 07:43 am
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ : রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমারের নৃশংসতা ও নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ লক্ষে বাংলাদেশের কক্সবাজার শিবিরে ১ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পুরুষ ও নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পরিচালিত হত্যা, ধর্ষণ, মারধর ও সম্ভাব্য অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। 
 
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, আন্তর্জাতিক আইন ও অপরাধ বিষয়ে ২০ জন বিশেষজ্ঞ তদন্তকারী এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এই বছর মার্চ ও এপ্রিলে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
 
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তদন্তের কথা স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন,  ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মিয়ানমার সরকার ও নিরাপত্তাবাহিনীর উচিত দেশটির সব মানুষের মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। যারা এটা করতে ব্যর্থ হয় তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে রাখা।’
 
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্তকারীদের সংগৃহীত তথ্যগুলো ওয়াশিংটনে বিশ্লেষণ করা হবে এবং প্রতিবেদন আকারে আগামী মে অথবা জুন মাসের প্রথম দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করবে কিনা কিংবা মিয়ানমার সরকারের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা আন্তর্জাতিক বিচারের সুপারিশ করতে ব্যবহৃত হবে কিনা তা পরিষ্কারভাবে জানানো হয়নি।
২০০৪ সালে সুদানের দারফুর অঞ্চলে গণনিপীড়ন তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র যে ফরেনসিক তদন্ত চালিয়েছিল সেই পদ্ধতি অনুসরণ করেই তদন্ত চালানো হচ্ছে। সুদানের তদন্তের সময় যুক্তরাষ্ট্র যেখানে গণহত্যা সংঘঠিত হয়েছিল বলে জানায় এবং সুদান সরকারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
 
তদন্তে নিয়োজিত থাকা এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গাদের কাছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার তারিখ, সহিংসতার সময় তাদের অভিজ্ঞতা, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধদের ভূমিকার কথা জানতে চাওয়া হয়। তদন্তকারীরা রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চান, সেনাদের উপস্থিতি ও কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি জানান, তদন্তকারীরা অপরাধীদের নাম ও পরিচয় এবং নিপীড়নের জড়িত নির্দিষ্ট ব্যটালিয়নের পরিচয় পেয়েছেন।
 
গতবছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের বাঙালি মুসলিম আখ্যা দিয়ে নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে। তবে এবারের ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো হওয়ার এক পর্যায়ে প্রত্যাবাসন চুক্তিতে বাধ্য হয় মিয়ানমার। তবে সেই  চুক্তির পর বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও ধোঁয়াশা কাটছে না।