Bangladesh
Padma destroying Parvati
সর্বশেষ এখানকার কেদারপুর গ্রামের পুরোটাই এখন পদ্মার গর্ভে। সেই সংগে অসংখ্য পরিবার আশ্রয়হীন। এই গ্রামের গোপিনাথ বাছার বাড়ির পাশে মূলফৎগঞ্জ বাজারে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। গত ৭ আগস্ট দুপুরে বাজারের পাশে সাধুর বাজার লঞ্চঘাটে যান ভাঙনের শিকার প্রতিবেশীদের মালামাল সরিয়ে নেয়ার কাজে সহায়তা করতে। এমন সময় ওই লঞ্চঘাটের আটটি দোকানসহ ২০০ মিটার জায়গা নদীতে ধসে পড়ে। নিখোঁজ হন গোপিনাথসহ ৯ ব্যক্তি। ঘটনার চারদিন পর আল আমীন নামে এক যুবকের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও গোপিনাথসহ অন্য নিখোঁজদের সন্ধান এক মাসেও পাওয়া যায়নি।
পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গোপিনাথের স্ত্রী পার্বতী। এক মাসেও স্বামীর কোনো সন্ধান পাননি। শেষ আশ্রয় বসতবাড়িটিও পদ্মা গ্রাস করেছে। এখন আর জীবনে কিছুই অবশিষ্ট নেই তার। খোলা আকাশের নিচে রান্না করেন আর নীরবে চোখের পানি ফেলেন। চোখ মুছতে মুছতে বললেন, বেঁচে থাকার আর কোনো অবলম্বন নেই। কান্নাই এখন আমার জীবনের বড় সত্য। গোপিনাথ নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর উত্তর কেদারপুর গ্রামে তার বসতবাড়িটিও নদীতে বিলীন হয়ে যায়। গ্রামের শেষ প্রান্তে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন তার স্ত্রী পার্বতী। একটি ছাপড়া ঘরে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বাস করছেন তিনি।
পার্বতী বলেন, ওইদিন দুপুরে এ দুঃসংবাদ পাই। ছুটে যাই নদীর পাড়ে, কেউ মানুষটার সন্ধান দিতে পারলো না। নদীতে ট্রলার নিয়ে আত্মীয়-স্বজনরা অনেক খুঁজেছে, কিন্তু পাওয়া যায়নি।
এখনো উনুনে ভাত চাপিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করি। মনে হয় মানুষটা এসে ডাকবে ‘পার্বতী বাজার এনেছি, তুমি রান্না করো।’ তিনি বলেন, মানুষটাতো এলোইনা এমনকি আশ্রয়ের শেষ সম্বলটুকুও পদ্মায় চলে গেল। মানুষটা যা আয় করত তা দিয়ে ভালোভাবেই আমাদের সংসার চলত। এখন দুই সন্তান নিয়ে কোথায় যাব? কে দেবে আমারে আশ্রয়।