Bangladesh
Rifat murder: Need to give them exemplary punishment to set an example, says court
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১ অক্টোবর ২০২০ : বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, রিফাত হত্যা মামলার আসামিদের নির্মম বর্বরতা ও নির্মমতা মধ্যযুগীয় কায়দায়কেও হার মানিয়েছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে তাদের অনুসরণ করে অন্য যুবকরাও ধ্বংসের পথে যাবে। এসব আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, পাঁচজনের সহযোগী হিসেবে রিফাত শরীফ হত্যায় অংশ নিয়েছেন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। একই সঙ্গে তারা ছয়জন রিফাতের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। এজন্য কলেজগেটের সামনে সময়ক্ষেপণ করেন মিন্নি। রিফাতকে যখন মারার জন্য আসামিরা নিয়ে যাচ্ছিল তখন স্বাভাবিক ছিলেন মিন্নি। এতেই প্রমাণিত হয়, মিন্নি হত্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তারই পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এজন্য তাকেও ফাঁসি দেয়া হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলেছিলাম, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির ষড়যন্ত্রের কারণে রিফাত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আদালতে রায়ের পর্যবেক্ষণে তাই উঠে এসেছে। রিফাত শরীফকে হত্যা পরিকল্পনা করেছেন মিন্নি। একই সঙ্গে আসামিদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। এজন্য মিন্নিকে ফাঁসি দিয়েছেন আদালত।
বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে আগেও বলেছেন, মিন্নি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। এ হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি, তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজি, ছয় নম্বর আসামি রাব্বি আকন এবং ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া মিন্নি নিজেও রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে আরও বলেছেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়েছিল এবং সেই বিয়ে বলবৎ থাকার পাশাপাশি বিয়ের তথ্য গোপন করে ধর্মীয় এবং দেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে মিন্নি রিফাত শরীফকে বিয়ে করে। এর প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেন তারা।
এছাড়া হত্যাকাণ্ডের আগের দিন নয়ন বন্ডের বাসায় গিয়ে নয়ন বন্ডের সঙ্গে দেখা করে রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মিন্নি। আদালতে হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে মিন্নির সঙ্গে হত্যাকারীদের মোবাইল ফোনে কথোপকথনের তালিকার পাশাপাশি মেসেজ আদান-প্রদানের তথ্য তুলে ধরেন; আদালতকে হত্যাকাণ্ডের দিন সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখান আইনজীবীরা।